শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৮ °সে

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৪৪

সুপারম্যানের ভিলেন খ্যাত অভিনেতার মৃত্যু

সুপারম্যানের ভিলেন খ্যাত অভিনেতার মৃত্যু
অনলাইন ডেস্ক

অস্কার মনোনীত ইংরেজ অভিনেতা টেরেন্স স্ট্যাম্প আর নেই। ‘সুপারম্যান’ ছবির ভয়ংকর ভিলেন জেনারেল জড চরিত্রে অভিনয় করে তিনি বিশ্বজুড়ে খ্যাতি পেয়েছিলেন। সেই কিংবদন্তি অভিনেতা রবিবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

স্ট্যাম্পের পরিবার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘তিনি শুধু একজন অসাধারণ অভিনেতাই ছিলেন না, ছিলেন একজন গভীর মনের লেখকও। তার রেখে যাওয়া কাজ বহু বছর ধরে মানুষকে ছুঁয়ে যাবে।’

স্ট্যাম্পের অভিনয় ক্যারিয়ার বিস্তৃত হয়েছিল প্রায় ছয় দশক জুড়ে। ১৯৬২ সালে ‘বিলি বাড’ চলচ্চিত্রে অভিষেকের মাধ্যমেই তিনি ঝড় তোলেন। প্রথম ছবিতেই সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে অস্কার মনোনয়ন এবং গোল্ডেন গ্লোব জয় করে নেন। এরপর একে একে অভিনয় করেছেন ‘দ্য কালেক্টর’, ‘ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড’, ‘সুপারম্যান’ ও ‘সুপারম্যান-২’, ‘ভ্যালকিরি’, ‘দ্য অ্যাডজাস্টমেন্ট ব্যুরো’সহ বহু আলোচিত ছবিতে।

১৯৯৪ সালে অস্ট্রেলিয়ান সিনেমা ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অব প্রিসিলা, কুইন অব দ্য ডেজার্ট’-এ একজন ট্রান্সজেন্ডার নারীর চরিত্রে অভিনয় করে আবারও বাজিমাত করেন তিনি। ছবিটির জন্য মনোনীত হন বাফটা ও গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারে।

ষাটের দশকে টেরেন্স স্ট্যাম্প ছিলেন এক সাংস্কৃতিক আইকন। সুদর্শন চেহারা, ফ্যাশন সেন্স আর আলোচিত সম্পর্কের জন্যও তিনি ছিলেন আলোচনায়। একসময় সম্পর্কে জড়ান অভিনেত্রী জুলি ক্রিস্টি ও সুপারমডেল জিন শ্রিম্পটনের সঙ্গে। সেই জুলি ক্রিস্টিকে নিয়েই পরে অভিনয় করেন ‘ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড’ ছবিতে।

কিংবদন্তি ব্যান্ড দ্য কিন্কসের বিখ্যাত গান ‘ওয়াটারলু সানসেট’-এর ‘টেরি মিটস জুলাই’ লাইনটি আসলে টেরেন্স স্ট্যাম্প ও জিন শ্রিম্পটনেরকে কেন্দ্র করেই লেখা হয়েছে বলে মনে করা হয়। তখন তাদের প্রেম ছিল বহুল চর্চিত।

ষাট দশকের শেষে ক্যারিয়ারের গতি কমে গেলে স্ট্যাম্প চলে যান ইতালি ও পরে ভারতে। সেখানে আধ্যাত্মিক সাধনায় ও যোগচর্চায় কাটান বেশ কয়েক বছর। তিনি নিজেই বলেছিলেন, ‘ভাবতাম আমি সুন্দর, সফল আর বিখ্যাত হলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে আমি অপূর্ণই থেকে গেলাম।’

১৯৭৬ সালে অবশেষে সুযোগ আসে সুপারম্যান ছবিতে জেনারেল জড চরিত্রে। এ চরিত্রই তাকে ফিরিয়ে আনে মূলধারার চলচ্চিত্রে এবং আবারও বিশ্বব্যাপী পরিচিতি এনে দেয়।

স্ট্যাম্পের মৃত্যুতে অনেক তারকা ও প্রতিষ্ঠান শোক প্রকাশ করেছে। তার সহ-অভিনেত্রী সারাহ ডগলাস লিখেছেন, ‘খুব দুঃখজনক খবর। টেরেন্স ছিলেন অবিশ্বাস্য প্রতিভাবান ও মার্জিত মানুষ। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে এত মাস তার সঙ্গে কাটানো ছিল এক সৌভাগ্য।’

বাফটা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা টেরেন্স স্ট্যাম্পের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত।

পরিচালক স্টিফেন এলিয়ট গত বছরই জানিয়েছিলেন, ‘প্রিসিলা’র সিক্যুয়েলে ফিরতে সম্মত হয়েছিলেন টেরেন্স স্ট্যাম্প। তখন তার বয়স ৮৫। কিন্তু পরিচালকের ভাষায় তিনি ছিলেন ‘সবচেয়ে ফিট মানুষ, যিনি মদ ছুঁয়েও দেখেননি আর প্রায় ঘাসপাতা খেয়ে বেঁচে ছিলেন।’

কিন্তু তার আগেই শেষ হয়ে গেল কিংবদন্তি অভিনেতা টেরেন্স স্ট্যাম্পের জীবনের মহাগল্প।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়