প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৫, ১৫:০৬
পাকিস্তানে ২৫ মিনিটে ২৪ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ভারত

জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার দুই সপ্তাহ পর পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে রাতের আঁধারে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। বুধবার মধ্যরাতের এই হামলায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী মাত্র ২৫ মিনিটে অন্তত ২৪ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে পাকিস্তানে। এই হামলায় পাকিস্তানে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত। যদিও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বলেছে, ভারতের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
বুধবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানে হামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি বলেন, বুধবার (৭মে) রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে দেড়টা পর্যন্ত পাকিস্তানি ভূখণ্ডে হামলা চালানো হয়েছে। ভারতের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী যৌথভাবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের এই অভিযান পরিচালনা করেছে। ২৫ মিনিটে ৯টি লক্ষ্যবস্তুতে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ভারতীয় বাহিনী।
সংবাদ সম্মেলনে বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার ভায়োমিকা সিংহ উপস্থিত ছিলেন। মিশ্রি বলেছেন, জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার জবাবে পাকিস্তানে হামলা করা হয়েছে। পেহেলগামের ওই হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিকের প্রাণহানি ঘটে।
কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বলেছেন, এই অভিযানে আমাদের কৌশলের পরিবর্তনের ইঙ্গিত রয়েছে। গত তিন দশক ধরে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরে সন্ত্রাসীদের নিয়োগের কেন্দ্র, প্রশিক্ষণ অঞ্চল এবং প্যাড চালুসহ অবকাঠামো নির্মাণ করে আসছে ইসলামাবাদ। এই অভিযান সেসব স্থাপনা ভেঙে ফেলার এবং ভবিষ্যতের হামলা ঠেকানোর উদ্দেশ্যে পরিচালনা করা হয়েছে।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘‘ভারতের বিরুদ্ধে আরও হামলা আসন্ন বলে আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে। যে কারণে আজ সকালে ভারত আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে ঠেকাতে পাল্টা হামলার অধিকার প্রয়োগ করেছিল... আমাদের এই হামলা পরিমিত, কম উত্তেজনামূলক, আনুপাতিক ছিল। এসব হামলায় সন্ত্রাসীদের অবকাঠামো ভেঙে দেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করা হয়েছিল।’’
তিনি বলেন, ভারতের সামরিক বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের মুজাফফরাবাদ, কোটলি, বাহাওয়ালপুর, রাওয়ালাকোট, চাকস্বরী, ভিম্বার, নীলাম উপত্যকা, ঝিলাম এবং চাকওয়ালে সন্ত্রাসীদের স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। আর এসব অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোর আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে বলে আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে। বছরের পর বছর ধরে ভারতে একাধিক হামলার জন্য দায়ী দুটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তইয়্যেবা (এলইটি) এবং জইশ-ই-মোহাম্মদের সাথে এসব স্থাপনার সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়।