প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫, ১৮:০৯
আগুনে পুড়ল ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানের রাজধানী তেহরানে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে মূল লক্ষ্যবস্তু করে একাধিক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইরানের স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে তেহরানে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
ইসরায়েলের চালানো এই হামলার প্রাক্কালেই ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র আগুনে পুড়ে গেছে। নাতাঞ্জের এই পারমাণবিক স্থাপনাটি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু বলে পরিচিত।
শুত্রবার (১৩ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু বলে পরিচিত নাতাঞ্জে অবস্থিত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাটি শুক্রবার ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবি সিএনএন কর্তৃক যাচাই করে এটি নিশ্চিত করা হয়েছে। একই ধরনের তথ্য দিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনও।
নাতাঞ্জ শহরটি রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এবং সেখানেই রয়েছে ইরানের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক স্থাপনা। এটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য অত্যাধুনিক সেন্ট্রিফিউজ তৈরি ও সংযোজনের কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমেই ইউরেনিয়াম পারমাণবিক জ্বালানিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যে ভিডিওগুলো সিএনএন যাচাই করেছে, তাতে নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রের দিক থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভির ভিডিওতেও দেখা যায়, স্থাপনাটি থেকে আকাশচুম্বী কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠছে। নাসার ফায়ার ইনফরমেশন ফর রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এফআইআরএমএস) অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রাত ২টার কিছু পরে সেখানে আগুনের সূত্রপাত হয়।
এখনও পর্যন্ত ইরানি সরকার এই আগুন বা হামলা নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি বলেও জানিয়েছে সিএনএন।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রে একটি বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল, যা সেসময় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে বড় ধাক্কা দিয়েছিল। সে সময়ও তেহরান ঘটনাটির ব্যাখ্যা দিতে হিমশিম খেয়েছিল।
মূলত ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার পর ইরান ধীরে ধীরে ইউরোনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বাড়াতে শুরু করে এবং এরপরই এই ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটতে শুরু করে।
বিশ্লেষকদের মতে, নাতাঞ্জের এই সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড সরাসরি ইসরায়েলের হামলার জেরেই হয়ে থাকতে পারে। কারণ ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ভেঙে দিতে পরিকল্পিতভাবে রাতের আঁধারে এই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে বিষয়টি এখনও ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি।