প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২২, ১১:১৩
‘বছরের শেষ নাগাদ কমবে জ্বালানি তেলের দাম’
মুদ্রাস্ফীতি ও ডলারের দাম ওঠানামাকে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, বছরের শেষ নাগাদ জ্বালানি তেলের দাম কমে আসবে। সেইসঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও কমবে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) সেলিব্রেটি হলে গত রাতে ‘জাতীয় ব্র্যান্ডিং: বিশ্বব্যাপী নতুন প্রতিভা এবং বিনিয়োগের আকর্ষণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি), ব্লুমবার্গ এলপি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন ব্লুবার্গ মিডিয়া এলপির এপিসিএ মিডিয়া সেলস অ্যান্ড মার্কেটিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনিতা রাজন। আর মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্লুমবার্গের আঞ্চলিক কৌশলের প্রধান অ্যান্ড্রু বগস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালমান এফ রহমান বলেন, অবিশ্বাস্য বা যাই বলুন না কেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন আমাদের বড় অর্জন। কারণ যখন বিশ্বব্যাংক সেই প্রকল্প বন্ধ করে দেয়, তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন পদ্মা সেতু নির্মণ করা হবে নিজস্ব তহবিলে। অনেকে এ বিষয়টা নিয়ে সংশয় ছিল। অনেক গুরুত্বপূর্ণ লোকজন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছিল, পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। যখন আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করি, তখন অনেকেই বলেছিল যে, এ সেতুটি ভেঙে যাবে। কিন্তু আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। আর প্রধানমন্ত্রী এ সেতু উদ্বোধন করেছেন। এ সেতু আমাদের জন্য গেম চেঞ্জার হতে যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশের সাফল্যের গল্পগুলোর মধ্যে একটি। আর গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ নিজেকে বদলে ফেলেছে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা মুদ্রাস্ফীতি ও ডলারের দাম ওঠানামার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে আমরা মুদ্রাস্ফীতির হার খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করি। একই সঙ্গে আমাদের টাকা থেকে ডলারের রেট খুব স্থিতিশীল ছিল। আর আমরা যেসব রোড শো করেছি সেখানে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত গত দুই বা তিন মাস মূল্যস্ফীতি ও ডলারের দাম অস্থিতিশীল রয়েছে, এটা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
এ বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়ে আসবে। এরকম অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থা আমাদের আর বেশিদিন দেখতে হবে না। বছরের শেষ নাগাদ জ্বালানি তেলের দাম কমে আসবে। জ্বালানি তেলের দাম কমার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও কমবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগে কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ। তাই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ব্র্যান্ডিং চালু আছে। আমাদের প্রতিভা আছে এবং বিনিয়োগ অপেক্ষা করছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা সারা বিশ্বে কিছুটা অস্থিরতা প্রত্যক্ষ করছি। এখন বিশ্বজুড়ে যা কিছু ঘটছে, তাই বাংলাদেশে প্রভাব ফেলছে। আসলে, আমরা আগে ভুল ছিলাম। এখন আমরা সঠিক পথে আছি। আমরা এখন বিশ্বের সব কিছুর সঙ্গে এতটাই সংযুক্ত যে, যা কিছু ঘটেছে তা প্রভাব আমাদেরও স্পর্শ করছে।
বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশে সাপ্লাই চেইনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। আর জ্বালানি ও বিদ্যুতের সাপ্লাই চেইনে বিপর্যয় বিশ্বজুড়ে গুরুতর সমস্যা তৈরি করেছে। শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনে নয়, শিল্প উৎপাদনের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও এ সমস্যা বিরজমান। তাই সবকিছুরই দাম, মুদ্রাস্ফীতির ওপর প্রভাব পড়ছে। এটি বিশ্বের একক অর্থনীতির সবকিছুকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের আগের খারাপ সময় কেটে গেছে। আমরা এখন অনেক এগিয়ে আছি। দুই বছর আগে বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং শুরু করেছিল এখন তা একটা ট্রেন্ডিংয়ে পরিণত হয়েছে। এজন্যই ব্লুমবার্গ আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। আজ অ্যান্ড্রু বগসের প্রেজেন্টেশন দেখেছি। তিনি বাংলাদেশে যেসব ভালো জিনিস দেখেছেন তা স্পষ্টভাবে বলেছেন। পাশাপাশি জরিপের ফলাফল কি তাও তিনি জানিয়েছেন। আর মিসেস সুনিতা বাংলাদেশে যা পর্যবেক্ষণ করেছেন তা বলেছেন এবং কেন তারা এখন বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বে কাজ করছে সেটাও জানিয়েছেন। এতসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের সোনার বাংলা বিশ্বের অন্যতম সেরা কাজ করছে।
সূত্র: জাগো নিউজ