রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৬ °সে

প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ২২:৫২

বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক কি নতুন যুগে প্রবেশ করছে?

বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক কি নতুন যুগে প্রবেশ করছে?
অনলাইন ডেস্ক

দুইদিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। তার এ সফরকে আঞ্চলিক কূটনীতিতে ঐতিহাসিক ব্রেকথ্রু হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

গত ১৩ বছরের মধ্যে পাকিস্তানের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটি প্রথম বাংলাদেশ সফর। এই সফর ইঙ্গিত করছে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তান সম্পর্ক জোরালো এবং বাণিজ্য, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং সংস্কৃতি বিনিয়ম করতে চায়।

সংবাদমাধ্যম পাক ট্রিবিউন জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ বাংলাদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন ইসহাক দার।

এসব বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিকসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হবে।

সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনীতিকরা এটিকে দুই দেশের মধ্যে বিশ্বাস পুনরস্থাপনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখছেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তা নিয়ে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক ভালো ছিল না।

পাক ট্রিবিউন বলেছে, সাবেক স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিদায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে সংলাপ এবং সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বৃদ্ধির নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।

ইসহাক দারের এ সফরে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে বলে উভয় দেশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। বাণিজ্য বৃদ্ধি, ভিসা প্রক্রিয়া সহজ, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং সম্মিলিতভাবে আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রতিষ্ঠায় এসব সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে বলে জানিয়েছে পাক ট্রিবিউন।

সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকরা দেখছেন, পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য করিডর বৃদ্ধি করতে চায়। তারা বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির সুযোগ নিতে চায়।

অপরদিকে বাংলাদেশ পাকিস্তানি বাজারে আরও প্রবেশাধিকার, টেক্সটাইল ও তথ্যপ্রযুক্তির মতো খাতে দক্ষতা অর্জন এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে আরও বৃহৎ সহযোগিতা চায়।

ইসহাক দারের এই সফরকে পাকিস্তানের একটি কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে, যার লক্ষ্য হলো আঞ্চলিক সম্পর্কগুলো নতুন করে সাজানো। এক্ষেত্রে এমন অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, যা ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্যেও টিকে থাকতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, ইসলামাবাদ ও ঢাকার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বাড়াতে পারে, বিশেষত যখন প্রতিবেশী অঞ্চলগুলোতে উত্তেজনা বাড়ছে।

এই সফর দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে কি না, তা নির্ভর করছে টেকসই রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং চলমান আলোচনা থেকে কী বাস্তব ফল আসে তার ওপর। তবে আপাতত এই সফরকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে, যা আরও বেশি সহযোগিতা ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়ার পথ খুলে দেবে।

সূত্র: পাক ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়