প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৫, ০০:৪৩
বাংলাদেশে নতুন করে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করা হচ্ছে : নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগের মাফিয়াতন্ত্র, চাঁদাবাজি, গুম ও খুনের রাজনীতি বন্ধ করতেই আমরা মাঠে নেমেছি। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে, গণহত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে সংস্কার করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।
রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে ঝালকাঠিতে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিতে শহরের কাপড়িয়া পট্টি এলাকার একটি ভবনের সামনে পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের পরও আমরা যেন আবার পুরোনো দখলদার, গুম-খুনের রাজনীতিতে ফিরে না যাই। ইদানিং রাজনীতিতে একটি নতুন ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তোলা হচ্ছে, যা জুলাই আন্দোলনের চেতনাবিরোধী। আমরা এই সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই।
তিনি বলেন, ঝালকাঠির সন্তানেরাও জুলাইয়ের সেই উত্তাল দিনে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রাজপথে নেমেছিল। তারা জানতো, এই লড়াই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে—এই লড়াই জীবনের, ভবিষ্যতের। যারা মনে করে এই স্বৈরাচার পতন হঠাৎ হয়েছে, তারা ভুল জানে। শত শত মানুষ শহীদ হয়েছে, হাজার হাজার আহত হয়েছে। জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে অর্জিত হয়েছে এই মুক্তি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ গেছে ঠিকই, কিন্তু সেই শোষণমূলক সিস্টেম আজও অক্ষত। আমরা সেই ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের জন্যই লড়াই করছি। শুধু সরকার বদল নয়, আমাদের লক্ষ্য পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে শিক্ষা হবে সবার অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা হবে সুলভ ও মানসম্পন্ন, মানবিক উন্নয়ন ও সামাজিক মর্যাদা থাকবে প্রতিটি মানুষের জীবনে। আমরা চাই দুর্নীতির অবসান হোক, চাঁদাবাজির সংস্কৃতি চিরতরে বন্ধ হোক। আজও দেখা যাচ্ছে, প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হচ্ছে। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই না। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা আবারও রাস্তায় নামবো। বারবার নামবো। জুলাই আন্দোলনের চেতনার বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র হলে আমরা চুপ করে থাকবো না। আজকের লড়াইটা শুধুই রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য নয়—এটা সাধারণ মানুষের মর্যাদার জন্য, ন্যায়ের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) ডা. মাহমুদা মিতু, যুগ্ম সদস্য সচিব মশিউর রহমান প্রমুখ।
এর আগে পিরোজপুরের কর্মসূচি শেষ করে ঝালকাঠির রাজাপুরে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা শহরের উদ্দেশে রওনা হন। প্রথমে তারা কায়েদ সাহেব হুজুর প্রতিষ্ঠিত নেছারাবাদ এনএস কামিল মাদরাসা পরিদর্শন করেন এবং তার কবর জিয়ারত করেন।