মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৭ °সে

প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২২:৫৬

‘কথামালার’ রাজনীতি মানুষ আর চায় না: তারেক রহমান

‘কথামালার’ রাজনীতি মানুষ আর চায় না: তারেক রহমান
অনলাইন ডেস্ক

দেশের মানুষ আর ‘কথামালার’ রাজনীতি চায় না, তারা প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সোমবার (৪ আগস্ট) ঢাকায় এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, কথামালার রাজনীতি দেশের মানুষ আর চায় না। পরিষ্কারভাবে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি যেমন বুঝি, এখানে প্রত্যেকটি মানুষ অনুধাবন করেন, বাংলাদেশের জনগণ পরিবর্তন চায়। আর স্বপ্ন কিংবা প্রতিশ্রুতি নয়, জনগণ এবার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চায়।

“বিএনপি জনগণের সেই আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেই আগামী দিনের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রণয়ন করছে, প্রণয়নের চেষ্টা করছে। আমাদের নেতাকর্মী, আমাদের দলের ভেতরে, দলের বাইরে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ যারা আছেন, তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করছি, কাজ করছি।”

রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়। ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও আমার না বলা কথা’ শিরোনামে জাতীয়তাবাদী যুবদল এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, “আমাদের আগামী দিনের নীতি হলো জনগণের জীবন উন্নয়নের রাজনীতি। দেশ-বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করাই হবে আমাদের রাজনীতির অন্যতম মূল লক্ষ্য।

‘‘আমরা মনে করি, জনগণই বিএনপির সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে আমরা যত দ্রুত সম্ভব, আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের কাজ শুরু করব।

“তবে সারাদেশে জনগণের কাছে বিএনপির পরিকল্পনাগুলো পৌঁছে দিতে হবে। যারা শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাস করেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নেত্রী মানেন, তাদের সবার দায়িত্ব আমাদের এসব পরিকল্পনা জনগণের সামনে তুলে ধরা। কারণ এগুলো বাস্তবায়নে জনগণের রায় আমাদের প্রয়োজন।”

যুবদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, “বিগত দেড় দশকের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুবদলের নেতাকর্মীরা নির্যাতন, নিপীড়ন উপেক্ষা করেও রাজপথে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। আন্দোলন করতে গিয়ে ফ্যাসিবাদী সরকারের শত নির্যাতনে, নিপীড়নেও যুবদল পিছিয়ে যায়নি, রাজপথ ছেড়ে যায়নি। শুধু জুলাই-অগাস্টের অভ্যুত্থানে যুবদলের ৭৮ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন।

“জনগণ আপনাদের সঙ্গে ছিল এবং আপনাদের প্রতি জনগণের বিশ্বাস ছিল। এসব কারণেই আপনারা সাহসের সঙ্গে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছেন। আপনাদের প্রতি জনগণের সেই আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রাখুন। মনে রাখবেন, জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারলে আপনি নেতা, জনগণ প্রত্যাখ্যান করলে আপনি নেতা নন।”

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তারেক রহমান বলেন, “একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার কয়েক দশকের অভিজ্ঞতার আলোকে একটি বিষয়ে আপনাদের মনোযোগ আকর্র্ষণ করতে চাই। কী সেটা?

“পলাতক স্বৈরাচারের প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আপনাদেরকে, যুবদলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের রাজপথ থেকে দূরে রাখতে পারেনি। সুতরাং আপনাদের প্রতি আমার আহ্বান, জনগণের আস্থায় থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন।”

জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি এম আবদুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মেহেদি আমিন, মানবাধিকারকর্মী সাইয়েদ আবদুল্লাহ, যুব দলের রবিউল ইসলাম নয়ন, গুমের শিকার হওয়া সোহেল রানা, জুলাই আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া ডা. সায়েম আল মনসুর ফয়েজী, নিহত মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে আপন, ইয়াহিয়া আলীর মেয়ে তাইয়েবা খাতুন, হাফিজুর রহমান সুমনের স্ত্রী বিধী আখতার ও নাদিম মিজানের স্ত্রী তাবাসসুম আখতার নেহা।

অনুষ্ঠানে যুবদলের সাবেক নেতাদের মধ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরকত উল্লাহ বুলু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাইফুল আলম নিরব ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকু উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়