শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪  |   ৩৮ °সে

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:১৪

পাকিস্তানে চীনা কর্মীদের গাড়িতে হামলা, নিহত ৬

পাকিস্তানে চীনা কর্মীদের গাড়িতে হামলা, নিহত ৬
অনলাইন ডেস্ক

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মঙ্গলবার এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় পাঁচ চীনা নাগরিক ও তাদের গাড়ির চালক নিহত হয়েছেন। তারা দেশটিতে একটি বড় বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পে কর্মরত। হামলায় চীনা নাগরিকদের বহনকারী গাড়িটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী প্রথমে নিজের গাড়ি দিয়ে চীনা নাগরিকদের গাড়িতে ধাক্কা দেয়। এরপর তিনি বিস্ফোরণ ঘটালে গাড়িটি পার্বত্য কারাকোরাম হাইওয়ে থেকে গভীর খাদে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলের ছবিগুলোতে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বেশাম শহরের কাছে উপত্যকা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে।

প্রাদেশিক পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী গন্ডাপুর বলেন, হামলায় পাঁচ চীনা ও তাদের স্থানীয় চালক নিহত হয়েছেন।

গাড়িটি চায়না গেঝুবা গ্রুপ কম্পানির নির্মাণাধীন দাসু হাইড্রোইলেকট্রিক ড্যাম সাইট ও রাজধানী ইসলামাবাদের মধ্যে যাতায়াত করছিল। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদ খান বলেছেন, ‘একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী তার গাড়ি দিয়ে তাঁদের (চীনা) গাড়িতে ধাক্কা দেয়। এতে গাড়িটিতে আগুন ধরে যায় এবং খাদে পড়ে যায়।’

বেইজিং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

কিন্তু চীনের অর্থায়নকৃত প্রকল্পগুলো অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে এবং তাদের নাগরিকরা প্রায়ই সেখানে আক্রমণের শিকার হয়েছে। ২০২১ সালে একই নির্মাণ প্রকল্পের প্রকৌশলীদের বহনকারী একটি বাসে বোমা হামলায় ৯ চীনা কর্মীসহ ১৩ জন নিহত হয়েছিল।

চীনের বিনিয়োগের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দরের অফিসে হামলা চালানোর চেষ্টার সময় নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত সাত জঙ্গিকে হত্যা করার কয়েক দিন পর মঙ্গলবারের হামলা হলো। অন্যদিকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার জানিয়েছে, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি প্রধান নৌ বিমান ঘাঁটিতে হামলার চেষ্টার সময় জঙ্গিরা এক সেনাকে হত্যা করেছে।

এদিকে ইসলামাবাদে অবস্থিত চীনা দূতাবাস চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই বোমা হামলাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলে বর্ণনা করেছে।

দূতাবাস বলেছে, ‘পাকিস্তানে চীনা দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলো এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা এবং উভয় দেশের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য গভীর সমবেদনা এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানায়।’

হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইসলামাবাদে চীনের দূতাবাসে পৌঁছেছেন। শরিফ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আবারও চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের (সিপিইসি) প্রতিপক্ষরা এই ধরনের কাপুরুষোচিত কাজের মাধ্যমে এটিকে ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করেছে। তবে তারা তাদের দূষিত উচ্চাকাঙ্ক্ষায় কখনই সফল হবে না।’

বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর দাবি, স্থানীয়রা বড় চীনা প্রকল্পগুলো থেকে খুব কম সুবিধা দেখতে পাচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাইরের লোকরা সেখানে গিয়ে চাকরি করছেন।

চীনা কর্মীদের নিরাপত্তা উভয় দেশের জন্যই উদ্বেগের বিষয়। কমস্যাটস ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদের চীনা বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ আজিম খালিদ বলেন, ‘চীনা কর্মীরা ইতিমধ্যে ভীত ছিল। তাঁরা আরেকটি হামলা হওয়ার বিষয়ে ভয় পেয়েছিল। এই ধরনের প্রতিটি ঘটনায় প্রকল্পের গতি ধীর হবে।’

সূত্র : এএফপি

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়