বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫  |  

প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩৫

দুদিন আগেই ঢাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়, লক্ষ্য ২০ লাখ মানুষের সমাগম

দুদিন আগেই ঢাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়, লক্ষ্য ২০ লাখ মানুষের সমাগম
অনলাইন ডেস্ক

দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় স্ত্রী ও কন্যাসহ তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। বিমানবন্দর থেকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে তিনি সরাসরি পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় নির্ধারিত সংবর্ধনাস্থলে যাবেন। পরে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গুলশানের বাসভবনে যাবেন বলে জানা গেছে। তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তনকে ‘ঐতিহাসিক ও স্মরণীয়’ করে তুলতে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় তৈরি করা হচ্ছে বিশাল সংবর্ধনা মঞ্চ। কুড়িল মোড় থেকে সংবর্ধনাস্থল পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে লাগানো হয়েছে অসংখ্য ব্যানার ও ফেস্টুন। প্রায় ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুট আয়তনের মঞ্চের মূল কাঠামো শেষ হয়েছে, চলছে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জার কাজ। মঞ্চের চারপাশে তাঁবু স্থাপন, মাইক লাগানোসহ সার্বিক প্রস্তুতি তদারকি করছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যরা। পাশাপাশি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিও দেখা গেছে।

এখনো দুই দিন বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতা-কর্মীরা ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেকেই মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছেন, কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। তাদের কণ্ঠে শোনা যাচ্ছে— “মা-মাটি ডাকছে, তারেক রহমান আসছে” কিংবা “তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে”।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার জানান, সংবর্ধনা মঞ্চের কাজ প্রায় শেষের দিকে, খুব শিগগিরই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।

তারেক রহমানের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার ব্যবহারের জন্য বিদেশ থেকে আনা হয়েছে একটি বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন বুলেটপ্রুফ টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো এবং একটি বুলেটপ্রুফ বাস। বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলাম। সরকারি বাহিনীর পাশাপাশি দলের নিজস্ব নিরাপত্তা টিমও নিয়োজিত থাকবে।

দেশে ফেরার পর তারেক রহমান গুলশানে মা খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’র পাশের একটি বাড়িতে ওঠার কথা রয়েছে। তবে বাড়িটির সংস্কার কাজ এখনো চলমান থাকায় বিকল্প হিসেবে ‘ফিরোজা’য় তার জন্য তিনটি কক্ষ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

তারেক রহমানকে সংবর্ধনা দিতে সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মীদের যাতায়াত সহজ করতে রেলওয়ে ১০টি রুটে বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে কয়েকটি নিয়মিত ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। বিএনপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব বিশেষ ট্রেন ও অতিরিক্ত কোচ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

বিএনপি নেতারা দাবি করছেন, ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে ২০ লাখের বেশি মানুষের সমাগম ঘটবে। দলের শীর্ষ নেতা, সম্ভাব্য সংসদ প্রার্থী এবং বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিশাল বহর নিয়ে ঢাকায় আসবেন।

নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবরে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি মনে করছে, এই প্রত্যাবর্তন শুধু দলের জন্য নয়, দেশের রাজনীতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়